বরমী সোসাইটিঃ খালিদ হাসান মিলু (৬ এপ্রিল, ১৯৬০ – ২৯ মার্চ, ২০০৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী। ১৯৮০ সালের প্রথমার্ধে তার সঙ্গীত জীবন শুরু হয়। মিলুর প্রকাশিত একক এ্যালবাম সংখ্যা ১২ টি এবং মিক্সড ও ডুয়েট।তার এ্যালবাম সংখ্যা প্রায় ১২০ টি। তিনি প্রায় ২৫০ টি চলচ্চিত্রে কণ্ঠে দিয়েছেন। তিনি সর্বমোট প্রায় ১৫০০ টি এর মতো গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন। ১৯৯৪ ইং সালে 'হৃদয় থেকে হৃদয়' চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।
খালিদ হাসান মিলু ৬ এপ্রিল, ১৯৬০ সালে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার আদর্শপাড়া গ্রামে। ১৯৮০ সালে তার প্রথম এ্যালবাম 'ওগো প্রিয় বান্ধবী' প্রকাশিত হয়।
তার প্রকাশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম সমূহ হলোঃ 'আহত হৃদয়', 'শেষ খেয়া', 'নীলা', 'শেষ ভালোবাসা', 'মানুষ', 'অচিন পাখী' ও 'আমি একা বড় একা'। বন্যাট্য সংগীত জীবনে মিলুর গাওয়া কিছু জনপ্রিয় গান হলো : 'প্রতিশোধ নিও অভিশাপ দিও', 'ওগো প্রিয়় বান্ধবী', সেই মেয়েটি আমাকে ভালবাসে কিনা', ‘অনেক সাধনার পরে আমি’, 'আহত হৃদয় ছুটে আসি', 'সজনী আমিতো তোমায় ভুলিনি', ‘কতদিন দেহি না মায়ের মুখ’, ‘নিশিতে যাইয়ো ফুলবনে’, 'নীলা তুমি আবার এসো ফিরে’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’
মিলু চলে গেলেও রেখে গেছেন অসংখ্য শ্রুতিমধুর গান। আর রেখে গেছেন দুই কণ্ঠশিল্পী পুত্র। একজন প্রতীক হাসান, আরেকজন প্রীতম হাসান। তারা দুজনেই দুজনেই সঙ্গীতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। স্ত্রী ফাতিমা হাসান পলাশ।
মিলুর বড় ছেলে প্রতীক হাসান একবার প্রথম আলোর এক আলোচনায় বলেছিলেন, প্রতিবছরই এতিমখানায় প্রায় ২০০ লোককে খাওয়ানো হয় তাঁদের পরিবারের পক্ষ থেকে। সেখানে পবিত্র কোরআন খতম দেওয়ানো হয়। এ বছর (২০২০) করোনা পরিস্থিতির কারণে এতিমখানায় যাওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। তাই বাড়িতেই তারা বাবার জন্য দোয়া করেছেন দুই ভাই ও তাঁদের মা। তিনি বলেন প্রতিবার মীরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বাবার কবরকে দেখতে যান তাঁরা। এ বছর করোনার কারণে বাবার কবরের সামনে গিয়ে দোয়া করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন প্রতীক ও প্রীতম। এবং প্রতিবছরই মিলুর মৃত্যুদিনে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা ফোনে খোঁজখবর নেন। যাঁদের মধ্যে হানিফ সংকেত, অ্যান্ড্রু কিশোর, কুমার বিশ্বজিতের কথা বললেছিলেন প্রতীক হাসান। তাঁরাই নাকি ছিলেন প্রয়াত শিল্পীর ঘনিষ্ঠজন।
খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ একবার দ্য ডেইলি স্টার এর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘আজকে আমরা মিলুর মতো শিল্পীকে ভুলে যেতে দেখি। এইসব দেখে খুব ভয় হয়, একদিন আমাদের কি কেউ মনে রাখবে। তার মত শিল্পীর গুণ ও ব্যক্তিত্ব সবার সামনে তুলে ধরা উচিত। তাহলে নতুন প্রজন্ম মিলুর গুণ ও গানের সঙ্গে আরও পরিচিত হতে পারবে। এমন শিল্পী যুগে যুগে জন্মায় না।’
২০০৫ সালের ২৯ মার্চ রাত ১২ টা ১০ মিনিটে ঢাকার মনোয়ারা হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এর পূর্বে ২০০১ সালে তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০০৪ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্যাংককে ও নেওয়া হয়েছিল।
0 Comments